গরমকালে তৈলাক্ত ত্বক। যা আমাদের প্রায় সবারই অনেক বড় একটা সমস্যা । এসময় অনেকেই প্রশ্ন করেন তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন কি, তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির উপায় কি ইত্যাদি সম্পর্কে। আজকে আমরা তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে আপনাদের সমস্ত তথ্য দিবো। আজকে আমরা তৈলাক্ত ত্বক কেন হয় এবং তা থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানবো । তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পাবেন ।
তৈলাক্ত ত্বক কেন হয়
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় জানার আগে তৈলাক্ত ত্বক কেন হয় তা জানা প্রয়োজন। আমাদের ত্বকের নিচে এক ধরনের গ্রন্থি থাকে। যার নাম সেবাসিয়াস গ্রন্থি । এই গ্রন্থি সেবাম নামে ত্বকের নিচে তেল তৈরি করে । এই তেল ত্বকের হাইড্রেটেড অবস্থা বজায় রাখে। যার ফলে ত্বক সুস্থ থাকে । কিন্তু যখন সেবাসিয়াস গ্রন্থি অধিক পরিমানে তেল তৈরি করে তখন ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় । যা পরবর্তীতে ত্বকের উপরিভাগে দেখা যায় । তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন এর আগে চলুন জেনে নেই কেন ত্বক তৈলাক্ত হয়। নিমোক্ত কারনে মুখে তৈলাক্ত ভাব দেখা যায়ঃ
মানসিক চাপঃ মানসিক চাপ আমাদের দেহে হরমোনের তারতম্য সৃষ্টি করে। যার কারনে আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায়।
বেশি বেশি মুখ ধোয়াঃ সেবাম নামের তেল আমাদের ত্বক সুস্থ রাখে । যখন আমরা বেশি পরিমানে মুখ ধৌত করি তখন এই তেলের নিঃসরন বেশি হয় । এর ফলে আমাদের মুখ তৈলাক্ত হয়ে যায় ।
আর্দ্রতার অভাবের কারনেঃ যখন আমাদের শরীর আর্দ্র হয়ে থাকে তখন আমাদের মস্তিষ্ক দেহে তেলের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য সংকেত দেয় । সেসময় আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় ।
তৈলাক্ত ত্বক চেনার উপায়
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় তা জানার আগে আমাদের তৈলাক্ত ত্বক চেনা দরকার। তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন কি তা জানার আগে চলুন জেনে নেই এটি চেনার উপায় সম্পর্কে। গরমে আমরা প্রায় তৈলাক্ত ত্বকের সম্মুখীন হই । তবে সবার ত্বক তৈলাক্ত হয় না । যাদের ত্বকে সেবাম নামক তেলের অতিরিক্ত ক্ষরন হয়, তাদের ত্বকে তৈলাক্ত ভাব দেখা দেয় । এছাড়া তৈলাক্ত ত্বক চেনার আরও উপায়গুলো হলোঃ
মুখে “হোয়াইট হেড” বা ঘামাচির মত অংশ থাকবে ।
মুখে কিছু ব্যবহার করার পর মুখ আঠালো হয়ে যাবে ।
ত্বকে লোশন বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বক ঘেমে যাবে ।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কোন ফেসিয়াল ভালো
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় এর মধ্যে আছে ফেসওয়াস এর ব্যবহার। ত্বকের যত্নে আমরা কোন ধরনের ফেসওয়াশ ব্যবহার করবো তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দে ভুগি । বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে কোন ফেসওয়াশ ব্যবহার করবো তা আমাদের জানা নেই । মুখের ক্ষেত্রে আমরা যেকোন ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারি না । এতে মুখের ক্ষতি হয় ।
বাজারে অনেক ধরনের ফেসওয়াশ পাওয়া যায় । কিন্তু তার মধ্যে কোনটা আমাদের ত্বকের জন্য ভালো, কোনটা আমাদের ত্বকের জন্য খারাপ তা আমরা বুঝি না । তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন হিসেবে আমরা এই ফেসওয়াশ ব্যবহার করি। ফেসওয়াশ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যে ফেসওয়াশ গুলোতে জেলের পরিমান হালকা থাকে সেগুলো তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপযুক্ত । এছাড়া যে ফেসওয়াশ গুলো ত্বকের তেলেভাব দূর করার জন্য উপযোগী তা নিম্নে বলা হলোঃ
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় এর মধ্যে আছে মধু। মধুতে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান থাকে । এদের মধ্যে জিংক, লৌহ, ভিটামিন-বি, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম প্রধান । মধু একাধারে আমাদের দেহে অ্যান্টিসেপটিক, ব্যাকটেরিয়া দূর করতে কাজ করে । উক্ত উপাদান গুলো মানব দেহের লোমকূপ খুলে দেয় এবং আমাদের ত্বকের ব্ল্যাকহেড দূর করে আমাদের ত্বককে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে ।
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে মধু অনেক কার্যকরী। আমরা মধুকে আমাদের প্রতিদিনের তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন এ যোগ করতে পারি। তৈলাক্ত ত্বক থেকে তেলে ভাব দূর করতে মধু যেভাবে ব্যবহার করব তার নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ
প্রথমত আমরা যে মধু ব্যবহার করব তা প্রাকৃতিক কি-না তা যাচাই করার জন্য খুব অল্প পরিমানে মধু আমাদের মুখের এক জায়গায় মেখে নিয়ে দেখতে হবে এর কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কি না ।
দ্বিতীয়ত ত্বক পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে ।
এরপর খুব অল্প পরিমানে মধু নিয়ে আমাদের ত্বকের বা মুখের যে স্থানে তৈলাক্ত ভাব বেশি হয় সেই স্থানে সমানভাবে লাগাতে হবে ।
এরপর 10 থেকে 20 মিনিটের জন্য মুখ এভাবে রেখে দিতে হবে । যদি কারো তোকে সংবেদনশীল ভাব দেখা দেয় তবে সাথে সাথে তা ধুয়ে ফেলতে হবে ।
মুখ বা ত্বকে এলার্জি ভাব দেখা দিলে মুখে মধু দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন
তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায় এর মধ্যে রয়েছে তৈলাক্ত ত্বকের রুটিন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য প্রতিদিন কিছু নিয়ম মেনে চললে ত্বকের তেলেভাব অনেকটাই কমিয়ে আনা যায় । তৈলাক্ত ত্বকের সেই নিয়মগুলো রুটিন আকারে নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
দিনে কুসুম গরম পানি দিয়ে দুই থেকে তিনবার মুখ ধৌত করা ।
অর্গানিক ও ভালো ফেসওয়াশ ব্যবহার করা ।
বিভিন্ন ধরনের তৈলাক্ত খাবার পরিহার করা
ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা ।
হাত দিয়ে মুখের ত্বককে বেশি বেশি না ছোঁয়া ।
বিভিন্ন ধরনের মশ্চারাইজার ব্যবহার করা ।
উক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে ত্বকের তেলে ভাব কমে যায় এবং ত্বক সুস্থ ও সুন্দর থাকে ।
তৈলাক্ত ত্বকের উপকারিতা
আমরা এর আগে জেনেছি যে, তৈলাক্ত ত্বক আমাদের অসস্তির কারন । যার কারনে এটা থেকে মুক্তি পাবার জন্য আমরা বিভিন্ন নিয়্যম অনুসরন করি । কিন্তু আমরা তৈলাক্ত ত্বকের উপকারিতা সম্পর্কে অবগত নই । আমরা প্রতিনিয়ত তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন মেনে চললে সেখান থেকে অনেক উপকার পাবো। তৈলাক্ত ত্বক থাকার বিভিন্ন সুবিধা রয়েছে । নিম্নে এই সুবিধা গুলো উল্লেখ করা হলোঃ
চেহারায় বয়সের ছাপ না পড়াঃ যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের ত্বকে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভাজ পড়ে যায় । আর যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের ত্বকে খুব সহজে বলিরেখা পড়ে না । যার কারনে চেহারায় বয়সের ছাপ অনেক দেরিতে পড়ে ।
ময়েশ্চারাইজার এর অভাব হয় নাঃ যেহেতু প্রাকৃতিক তেলের কারনে মুখ তৈলাক্ত হয়, সেহেতু আলাদা করে মুখে ময়েশ্চারাইজার এর ব্যবহার করতে হয় না ।
ত্বকে সব সময় উজ্জ্বলতা কাজ করাঃ সিবাম তেল হলো প্রাকৃতিক তেল । এই তেলের কারনে ত্বক সবসময় আর্দ্র, মসৃণ, উজ্জ্বল ও নরম হয় ।
লেখকের বক্তব্য
আজকের পোস্টের মুল বিষয় ছিল তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির ৩টি উপায়, তৈলাক্ত ত্বক কি, এটি চেনার উপায়, তৈলাক্ত ত্বকের যত্নের রুটিন এবং তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে । গরম কালে আমরা এই তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যায় ভুগি । আজকের পোস্ট পরে এবং নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করি আপনি তৈলাক্ত ত্বক থেকে মুক্তি পাবেন ।
আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে এইরকম আরও নানা ধরনের কার্যকরী পোস্ট নিয়মিত শেয়ার করি । আমাদের পোস্টগুলো নিয়মিত পড়তে পেজটাকে ফলোও করুন এবং আমাদের সাথে থাকুন ।
Sumon is a health specialist and sociologist dedicated to improving community well-being. With expertise in public health and social dynamics, HE has led numerous health initiatives and conducted impactful research. Passionate about fostering healthier communities through informed, compassionate care, Sumon combines knowledge and empathy to create holistic solutions.
Sumon is a health specialist and sociologist dedicated to improving community well-being. With expertise in public health and social dynamics, HE has led numerous health initiatives and conducted impactful research. Passionate about fostering healthier communities through informed, compassionate care, Sumon combines knowledge and empathy to create holistic solutions.
One Comment